০৮:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

কিছুদিনের জন্য ফেসবুক আন-ইন্সটল করছি : শ্রীলেখা

  • আপডেট: ০৭:৪১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪
  • 31

গত ৯ আগস্ট থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডে উত্তাল অবস্থা কাঁটাতারের ওপারে। এক তরুণী চিকিৎসকের নির্যাতন-মৃত্যু নারীসুরক্ষা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে সকলকে। টালিউড, বলিউড থেকে দক্ষিণী, সব মহল থেকেই তোলা হয়েছে জোর প্রতিবাদ। এই আবহের মাঝে বিনোদনের দুনিয়ায় ঘটে যাওয়া নির্যাতন, হেনস্তার মত সমস্যাগুলোও উঠে আসছে। অভিনেত্রী থেকে টেকনিশিয়ান, হেনস্তা থেকে বাদ নেই কেউই।

কয়েক বছর আগে সাহস করে টালিউডে নারী নিগ্রহের বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন ওপার বাংলার অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। সম্প্রতি ভারতের মালয়ালাম পরিচালক রঞ্জিতের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেছেন শ্রীলেখা। এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, রঞ্জিত আমার সঙ্গে অসংযত আচরণ করেন। এমনকি আমাকে স্পর্শও করেছেন অনুমতি ছাড়া। অন্ধকার বারান্দায় আমাকে স্পর্শ করেন রঞ্জিত।

এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে হেমা কমিটির রিপোর্ট। যেখানে মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহু কালো অধ্যায় প্রকাশ্যে আসছে। সামনে এসেছে যৌন হেনস্তার গল্প। যেমন, দক্ষিণী অভিনেত্রী মিনু মুনীর চার সহ-অভিনেতার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন। এত শারীরিক, মৌখিক যৌন হেনস্তার মত ঘটনা এখন ভারতের শোবিজ গণমাধ্যমের শিরোনাম। যা এক বিশাল উদ্বেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিল্পীদের মাঝে।

বিষয়টি নিয়ে অন্য শিল্পীদের মত বেশ দুশ্চিন্তা করছেন শ্রীলেখা। কারণ, অন্যায়-অবিচার এ সকল কোনোকিছুই তিনি সহ্য করেননা। আগাগোড়াই ঠোঁটকাটা স্বভাবের এই অভিনেত্রী। ধর্ম, জাতি, দেশ কোনোকিছুকেই বিভক্ত করেননা তিনি। যেখানেই অনিয়ম-অত্যাচার দেখতে পান, সরাসরি মুখ খোলেন। আবার কিছু বিষয় খুব মনে গেঁথে নেন তিনি। বোঝাই যায়, সব মিলিয়ে, একটা স্ট্রেস এর মধ্যে আছেন অভিনেত্রী।

সে অবস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন শ্রীলেখা; তাইতো সিদ্ধান্ত নিলেন সকলের থেকে দূরে সরে নিজেকে আড়াল করবেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে অনেকটা বিরক্ত হয়েই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান এই অভিনেত্রী। শ্রীলেখা তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘কিছুদিনের জন্য ফেসবুক আন-ইন্সটল করছি। জন্মদিন পার্টির উইশেস আর ভাল লাগছে না। সেন্সিটিভ মানুষ আমি, আর্টিস্ট সেলিব্রিটি নই। এত স্ট্রেস নিতে পারছিনা। চারদিকের অবক্ষয় আমায় ক্লান্ত করছে। দিন কয়েকের ছুটি প্রয়োজন আমার, এসবের থেকে দূরে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ চেষ্টা না করাই শ্রেয়।’

শ্রীলেখার এই পোস্টটি দেখে তার অনুরাগীরা সহানুভূতি প্রকাশ করেন। তবে নেটিজেনদের একাংশ শ্রীলেখাকে একজন প্রতিবাদী বা মোটিভেশনাল স্পিকার মনে করেন। অনেকে এসবের আইডলও ভাবেন তাকে। যেহেতু বরাবরই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোজাসাপ্টা কথা বলেন শ্রীলেখা। এক নেটিজেনের মন্তব্য ছিল, ‘তুমি তো শক্তি, তুমি ভেঙে পড়লে কি করে লড়ব আমরা?’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি হেমা কমিটির রিপোর্টে দক্ষিণী বিনোদন জগতের একাধিক কাস্টিং কাউচ, যৌন হেনস্তা ও পারিশ্রমিকের বৈষম্যের কথা লেখা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলেখা, মিনু মুনীরসহ একাধিক অভিনেত্রী অভিযোগ জানিয়েছেন।

এদিকে শ্রীলেখাকে হেনস্তা করায় অভিযুক্ত পরিচালক রঞ্জিত মালয়ালম মুভি আর্টিস্টসের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। রঞ্জিতের কোঝিকোড়ের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি সমর্থকরা। সকল অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য সিনিয়র নারী পুলিশদের নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

কিছুদিনের জন্য ফেসবুক আন-ইন্সটল করছি : শ্রীলেখা

আপডেট: ০৭:৪১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

গত ৯ আগস্ট থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডে উত্তাল অবস্থা কাঁটাতারের ওপারে। এক তরুণী চিকিৎসকের নির্যাতন-মৃত্যু নারীসুরক্ষা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে সকলকে। টালিউড, বলিউড থেকে দক্ষিণী, সব মহল থেকেই তোলা হয়েছে জোর প্রতিবাদ। এই আবহের মাঝে বিনোদনের দুনিয়ায় ঘটে যাওয়া নির্যাতন, হেনস্তার মত সমস্যাগুলোও উঠে আসছে। অভিনেত্রী থেকে টেকনিশিয়ান, হেনস্তা থেকে বাদ নেই কেউই।

কয়েক বছর আগে সাহস করে টালিউডে নারী নিগ্রহের বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন ওপার বাংলার অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। সম্প্রতি ভারতের মালয়ালাম পরিচালক রঞ্জিতের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেছেন শ্রীলেখা। এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, রঞ্জিত আমার সঙ্গে অসংযত আচরণ করেন। এমনকি আমাকে স্পর্শও করেছেন অনুমতি ছাড়া। অন্ধকার বারান্দায় আমাকে স্পর্শ করেন রঞ্জিত।

এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে হেমা কমিটির রিপোর্ট। যেখানে মালয়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহু কালো অধ্যায় প্রকাশ্যে আসছে। সামনে এসেছে যৌন হেনস্তার গল্প। যেমন, দক্ষিণী অভিনেত্রী মিনু মুনীর চার সহ-অভিনেতার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন। এত শারীরিক, মৌখিক যৌন হেনস্তার মত ঘটনা এখন ভারতের শোবিজ গণমাধ্যমের শিরোনাম। যা এক বিশাল উদ্বেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিল্পীদের মাঝে।

বিষয়টি নিয়ে অন্য শিল্পীদের মত বেশ দুশ্চিন্তা করছেন শ্রীলেখা। কারণ, অন্যায়-অবিচার এ সকল কোনোকিছুই তিনি সহ্য করেননা। আগাগোড়াই ঠোঁটকাটা স্বভাবের এই অভিনেত্রী। ধর্ম, জাতি, দেশ কোনোকিছুকেই বিভক্ত করেননা তিনি। যেখানেই অনিয়ম-অত্যাচার দেখতে পান, সরাসরি মুখ খোলেন। আবার কিছু বিষয় খুব মনে গেঁথে নেন তিনি। বোঝাই যায়, সব মিলিয়ে, একটা স্ট্রেস এর মধ্যে আছেন অভিনেত্রী।

সে অবস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন শ্রীলেখা; তাইতো সিদ্ধান্ত নিলেন সকলের থেকে দূরে সরে নিজেকে আড়াল করবেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে অনেকটা বিরক্ত হয়েই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান এই অভিনেত্রী। শ্রীলেখা তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘কিছুদিনের জন্য ফেসবুক আন-ইন্সটল করছি। জন্মদিন পার্টির উইশেস আর ভাল লাগছে না। সেন্সিটিভ মানুষ আমি, আর্টিস্ট সেলিব্রিটি নই। এত স্ট্রেস নিতে পারছিনা। চারদিকের অবক্ষয় আমায় ক্লান্ত করছে। দিন কয়েকের ছুটি প্রয়োজন আমার, এসবের থেকে দূরে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ চেষ্টা না করাই শ্রেয়।’

শ্রীলেখার এই পোস্টটি দেখে তার অনুরাগীরা সহানুভূতি প্রকাশ করেন। তবে নেটিজেনদের একাংশ শ্রীলেখাকে একজন প্রতিবাদী বা মোটিভেশনাল স্পিকার মনে করেন। অনেকে এসবের আইডলও ভাবেন তাকে। যেহেতু বরাবরই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোজাসাপ্টা কথা বলেন শ্রীলেখা। এক নেটিজেনের মন্তব্য ছিল, ‘তুমি তো শক্তি, তুমি ভেঙে পড়লে কি করে লড়ব আমরা?’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি হেমা কমিটির রিপোর্টে দক্ষিণী বিনোদন জগতের একাধিক কাস্টিং কাউচ, যৌন হেনস্তা ও পারিশ্রমিকের বৈষম্যের কথা লেখা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলেখা, মিনু মুনীরসহ একাধিক অভিনেত্রী অভিযোগ জানিয়েছেন।

এদিকে শ্রীলেখাকে হেনস্তা করায় অভিযুক্ত পরিচালক রঞ্জিত মালয়ালম মুভি আর্টিস্টসের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। রঞ্জিতের কোঝিকোড়ের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি সমর্থকরা। সকল অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য সিনিয়র নারী পুলিশদের নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।