০৯:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে স্থান থেকে মিলেছে বোমার সরঞ্জাম

  • আপডেট: ১১:২৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪
  • 55

নেত্রকোণা সদর উপজেলায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা মৎস্য খামারে বোমা তৈরির সরঞ্জাম মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ঢাকার বম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশের প্রায় দেড়শ সদস্য কাইলাটী ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামের ওই খামারে অভিযান শুরু করে।

দুপুর সোয়া ২টার দিকে পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শাহ আবিদ হোসেন খামারের বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যে বিষয়গুলো দেখেছি তা দেখে আমাদের মনে হয়েছে এটা জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা। এখানে বিভিন্ন ধরনের জিহাদি বই, এক্সপ্লোসিভ, ডেটোনেটরসহ প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে।

“আমাদের কাছে মনে হয়েছে, তারা নিবিড়ভাবে প্রশিক্ষণ দিত। কারণ, আমরা এরকম বিভিন্ন ধরনের আলামত পেয়েছি। এখনি বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না। আমাদের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের বম ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে। পরে আমরা আপনাদেরকে সবকিছু জানাতে পারবো।”

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, “বিষয়টা এমন না যে, আপনি ভিতরে ঢুকলেন আর একটা একটা করে চেক করলেন। এটার মধ্যে যেহেতু এক্সপ্লোসিভ আছে এটা খুব বিপদজনক। ধরেন, যারা ওখানে যাচ্ছে ফুল প্রুফ হয়ে প্রটেক্ট হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আল্লাহ না করুক, যদি কোনো একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয় তাহলে মারাত্মক ধরনের বিপর্যয় হবে।”

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “সাধারণত আমরা এগুলোর জন্য যারা এক্সপার্ট তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে থাকি। সেজন্য আমাদের বম ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে।”

অভিযান কখন শেষ হতে পারে জানতে চাইলে ডিআইজি বলেন, “কত সময় লাগতে পারে এটা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে আজকে সারাদিন লাগতে পারে।”

সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা থেকে আগত বম ডিসপোজাল ইউনিট, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটসহ পুলিশের ১৫০ সদস্য এই অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ।

শনিবার দুপুর ১টা থেকে ভাসাপাড়া গ্রামের এই মাছের খামার ঘিরে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এর আগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভাসাপাড়া গ্রামের মাছের খামারে শুক্রবার অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। তখন সেখান থেকে একটি পিস্তল, ১৭টি গুলি ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, আগেই সেখানকার বাসিন্দারা সটকে পড়েছেন।

নেত্রকোণা জেলা শহর থেকে ভাসাপাড়া গ্রামটি প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল। তবে গ্রামটি একটি প্রান্তে নিরিবিলি পরিবেশে মৎস্য খামারটি অবস্থিত। এর পাশে হাওর রয়েছে।

এইখানে অভিযান চলার মধ্যেই শনিবার রাত ১০টায় নেত্রকোণা শহরের মদন বাসস্ট্যান্ডের পাশের বনুয়াপাড়া এলাকার নেওয়াজ নগরে একটি চারতলা ভবন জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রাখে।

মধ্যরাতের দিকে জেলা পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, রাত ৯টার দিকে বাড়িটির তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া সাইফুল ইসলামের (৪৫) ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে অভিযান চালানো হয়েছে। সাইফুল ইসলামের বাড়ি শরীয়তপুরে। তবে ফ্ল্যাটে কাউকে পাওয়া যায়নি।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে স্থান থেকে মিলেছে বোমার সরঞ্জাম

আপডেট: ১১:২৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪

নেত্রকোণা সদর উপজেলায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা মৎস্য খামারে বোমা তৈরির সরঞ্জাম মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ঢাকার বম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পুলিশের প্রায় দেড়শ সদস্য কাইলাটী ইউনিয়নের ভাসাপাড়া গ্রামের ওই খামারে অভিযান শুরু করে।

দুপুর সোয়া ২টার দিকে পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শাহ আবিদ হোসেন খামারের বাইরে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যে বিষয়গুলো দেখেছি তা দেখে আমাদের মনে হয়েছে এটা জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা। এখানে বিভিন্ন ধরনের জিহাদি বই, এক্সপ্লোসিভ, ডেটোনেটরসহ প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে।

“আমাদের কাছে মনে হয়েছে, তারা নিবিড়ভাবে প্রশিক্ষণ দিত। কারণ, আমরা এরকম বিভিন্ন ধরনের আলামত পেয়েছি। এখনি বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না। আমাদের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের বম ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে। পরে আমরা আপনাদেরকে সবকিছু জানাতে পারবো।”

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, “বিষয়টা এমন না যে, আপনি ভিতরে ঢুকলেন আর একটা একটা করে চেক করলেন। এটার মধ্যে যেহেতু এক্সপ্লোসিভ আছে এটা খুব বিপদজনক। ধরেন, যারা ওখানে যাচ্ছে ফুল প্রুফ হয়ে প্রটেক্ট হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আল্লাহ না করুক, যদি কোনো একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয় তাহলে মারাত্মক ধরনের বিপর্যয় হবে।”

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “সাধারণত আমরা এগুলোর জন্য যারা এক্সপার্ট তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে থাকি। সেজন্য আমাদের বম ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে।”

অভিযান কখন শেষ হতে পারে জানতে চাইলে ডিআইজি বলেন, “কত সময় লাগতে পারে এটা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে আজকে সারাদিন লাগতে পারে।”

সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা থেকে আগত বম ডিসপোজাল ইউনিট, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটসহ পুলিশের ১৫০ সদস্য এই অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ।

শনিবার দুপুর ১টা থেকে ভাসাপাড়া গ্রামের এই মাছের খামার ঘিরে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এর আগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভাসাপাড়া গ্রামের মাছের খামারে শুক্রবার অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। তখন সেখান থেকে একটি পিস্তল, ১৭টি গুলি ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, আগেই সেখানকার বাসিন্দারা সটকে পড়েছেন।

নেত্রকোণা জেলা শহর থেকে ভাসাপাড়া গ্রামটি প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল। তবে গ্রামটি একটি প্রান্তে নিরিবিলি পরিবেশে মৎস্য খামারটি অবস্থিত। এর পাশে হাওর রয়েছে।

এইখানে অভিযান চলার মধ্যেই শনিবার রাত ১০টায় নেত্রকোণা শহরের মদন বাসস্ট্যান্ডের পাশের বনুয়াপাড়া এলাকার নেওয়াজ নগরে একটি চারতলা ভবন জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রাখে।

মধ্যরাতের দিকে জেলা পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, রাত ৯টার দিকে বাড়িটির তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া সাইফুল ইসলামের (৪৫) ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে অভিযান চালানো হয়েছে। সাইফুল ইসলামের বাড়ি শরীয়তপুরে। তবে ফ্ল্যাটে কাউকে পাওয়া যায়নি।